WAHED TEACHING HOUSE, অপসংস্কৃতি ও তার প্রতিকার।
অপসংস্কৃতি ও তার প্রতিকারঃ-
সংস্কৃতি মানব জীবনের অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। আজ বিশ্বের দিকে দিকে চলছে শিক্ষা ও সংস্কৃতির যুদ্ধ। কোনো সংস্কৃতি যখন ইসলামী কার্যকলাপে প্রতিবন্ধকতার সৃষ্টি করে এবং নৈতিকতা বিবর্জিত হয় তখন তা অপসংস্কৃতি বলে চিহ্নিত হয়। এই অপসংস্কৃতির প্রভাবে জাতি তার নিজস্ব স্বকীয়তা হারিয়ে ফেলে এবং তরুণ সমাজ হয় বিপথগামী। মুসলমান জাতি আজ ইহুদি, খ্রিষ্টানদের চাল-চলন, পোশাক-পরিচ্ছদ, জীবন নির্বাহের যাবতীয় রীতিনীতি অন্ধভাবে অনুকরণ করে যাচ্ছে।
এহেন কার্যকলাপ থেকে জাতিকে রক্ষা করার জন্য প্রয়োজন জীবনের সর্বস্তরে ইসলামী সংস্কৃতি চর্চা করা এবং এর ব্যাপকতার জন্য নিজস্ব মিডিয়া সৃষ্টি করা। সংস্কৃতির বিকৃত রূপই হলো অপসংস্কৃতি। ধর্মগ্রন্থ আল কুরআন ও হাদিসের সাথে, আত্মা ও আচরণের সাথে, জীবনবোধ ও নৈতিকতার সাথে যার কোনো সম্পর্ক নেই, যা মানব জীবনকে কলুষময় করে এবং জীবনের ভয়াবহ পরিণতি ডেকে আনে তাই অপসংস্কৃতি।
তরুণ সমাজকে আজ অসত্যের ধূম্রজালে ঠেলে দেয়া হয়েছে। সঠিক পথের দিশা পাচ্ছে না তারা। মাঝিবিহীন নৌকার মতো জীবনের লক্ষ্য হারিয়ে মাঝ দরিয়ায় খাবি খাচ্ছে। এভাবে মুসলমান তার ধর্মীয় স্বকীয়তা হারাচ্ছে। আজ অনেক মেয়ের চাল-চলনে বোঝা যায় তারা ইসলামী বিধি-বিধানের ব্যাপারে খুবই অজ্ঞ। ইহকালই যেন তাদের সব। পরকালের চিন্তা করার সুযোগই পায় না। বেপর্দা ও অর্ধনগ্নতা মহামারির আকার ধারণ করছে।
তাদের অনেকেই অধিকার আদায়ের জন্য পাশ্চাত্যের নারীদের মতো রাস্তায় নেমে শ্লোগান দিচ্ছে আর এই অধিকারের নামেই নারীদের শিক্ষা দিচ্ছে লজ্জাহীনতা এবং টেনে নিচ্ছে জাহেলী যুগের নারীদের অবস্থানে। ইহুদি, খ্রিষ্টানরা অপসংস্কৃতির বিকাশে বিভিন্ন অপকৌশল অবলম্বন করছে। তার মধ্যে একশ্রেণির হলুদ মিডিয়া হচ্ছে মূল হাতিয়ার। এই মিডিয়া উস্কানিদাতা ও সন্ত্রাসীর ভূমিকায় নেমেছে। ইহুদি নিয়ন্ত্রিত মিডিয়া যা চায় তাই হচ্ছে। এমনকি এর মাধ্যমে জাতির ধর্ম, ইতিহাস, ঐতিহ্য, মূল্যবোধ নাশ করার গতি ত্বরান্বিত করা হচ্ছে।
গানের সুর-তরঙ্গে থাকে এক প্রকারের মাদকতা যা শ্রোতাকে মাতাল করে দেয়। বিষ দেহকে হত্যা করে, জীবনের অবসান ঘটায়। আর নাচ বা নৃত্য মানুষকে আচ্ছন্ন করে। অশ্লীল গান মুনাফেকী সৃষ্টি করে যেমনিভাবে পানি শস্য উৎপন্ন করে। কুরআন মজীদে সঙ্গীত গান-বাজনা নৃত্যকে ‘লাহওয়াল হাদিস’ বলা হয়েছে। এর শাব্দিক অর্থ হলো এমন কথা যা মানুষকে বিভ্রান্ত করে, দায়িত্ব ও কর্তব্যে তাকে গাফেল ও অসতর্ক বানিয়ে দেয়। বিজাতিরা আসল ধর্ম পরিত্যাগ করে ক্রীড়া ও কৌতুককেই ধর্মাচার হিসেবে গ্রহণ করেছে।
মহান প্রভু আল্লাহ তাআলা সূরা আনআমের ৭০ নং আয়াতে তাদের ত্যাগ করার নির্দেশ দিয়ে বলেন, তাদের পরিত্যাগ করুন, যারা নিজেদের ধর্মকে ক্রীড়া ও কৌতুকরূপে গ্রহণ করেছে এবং পার্থিব জীবন যাদের ধোঁকায় ফেলে রেখেছে।
এই অপসংস্কৃতি থেকে বাচতে হলে ধর্মীয় মুল্যবোধ জাগ্রত করতে হবে।
কারণ মনে রাখতে হবে একদিন আল্লাহর সামনে দাঁড়িয়ে জীবনের সমস্ত
কৃতকর্মের জবাবদিহি করতে হবে। তাই আসুন ইসলামের সুশীতল ছায়ায়
আশ্রয় গ্রহণ করে এই অপসংস্কৃতিকে রোধ করতে সক্ষম হয়।
হে আল্লাহ অপসংস্কৃতি থেকে আপনি আমাদেরকে হেফাজত করুন।আমিন।

No comments